"সোনা মসজিদ: শিবগঞ্জের ঐতিহ্যে মোড়ানো স্থাপত্যের মণিমুক্তা"

 "শিবগঞ্জের সোনা মসজিদ: ইতিহাস ও সৌন্দর্যের এক মুকুট"


সোনা মসজিদ, যাকে "গৌড়ের সোনা মসজিদ" বলেও ডাকা হয়, বাংলাদেশের প্রাচীন স্থাপত্যশৈলীর একটি উজ্জ্বল নিদর্শন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত এই মসজিদটি অতীতের ইতিহাস, ইসলামিক স্থাপত্য, ও ঐতিহ্যের এক অপূর্ব মেলবন্ধন। বাংলার সুলতানদের শাসনামলে নির্মিত এই মসজিদ আজও সৌন্দর্য ও ইতিহাসপ্রেমীদের কাছে জনপ্রিয় গন্তব্য। তবে এর প্রকৃত সৌন্দর্য ও রহস্য অনেকের কাছেই আজও অজানা। চলুন ঘুরে দেখি এই অপূর্ব স্থাপনাটির গল্প।








সোনা মসজিদের ইতিহাস

মসজিদটি ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে সুলতান আলাউদ্দিন হুসাইন শাহের পুত্র নাসিরউদ্দিন নসরত শাহের সময়ে নির্মিত হয়। ঐ সময়ের গৌড় অঞ্চল ছিল বাংলার রাজধানী, এবং সুলতানরা শিল্প-সাহিত্য ও স্থাপত্যের বিকাশে দারুণ আগ্রহী ছিলেন। মসজিদটির নামকরণ “সোনা” কেন করা হয়েছে, এ নিয়ে নানা মতবাদ রয়েছে। বলা হয়, এর গম্বুজ ও কারুকাজ একসময় সোনার প্রলেপে আচ্ছাদিত ছিল, যা সূর্যের আলোয় ঝলমল করত।



স্থাপত্যশৈলী: মোগল ও সুলতানি স্টাইলের সমন্বয়

সোনা মসজিদের স্থাপত্যশৈলী সত্যিই দৃষ্টিনন্দন। মসজিদটি লাল ইট এবং পাথর দিয়ে নির্মিত, যা মধ্যযুগীয় বাংলার সুলতানি স্থাপত্যের এক উদাহরণ। এর বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:



পাথরের কারুকাজ: মসজিদের বাইরের দেয়ালগুলোয় লতাপাতা ও জ্যামিতিক নকশা করা আছে।

১৫টি গম্বুজ: কেন্দ্রীয় গম্বুজটি তুলনামূলকভাবে বড় এবং চারপাশের ছোট গম্বুজগুলোর সঙ্গে এক অনুপম সামঞ্জস্য গঠন করে।

পাথরের মিহরাব ও খিলান: অভ্যন্তরীণ অংশে খোদাই করা পাথরের মিহরাবের সৌন্দর্য মোহিত করে।

প্রশস্ত আঙিনা: মসজিদের সামনে রয়েছে একটি খোলা আঙিনা, যা মসজিদটির স্থাপত্যকে আরও প্রশস্ততা দেয়।


মসজিদের চারপাশের পরিবেশ ও গুরুত্ব

মসজিদটি শুধু একটি ধর্মীয় স্থাপনাই নয়, এটি এক ঐতিহাসিক নিদর্শনও। এর চারপাশে খোলা প্রাকৃতিক পরিবেশ মসজিদের আভিজাত্যকে বাড়িয়ে তোলে। কাছেই রয়েছে প্রাচীন গৌড়ের অন্যান্য স্থাপত্য, যেমন দারাসবাড়ি মসজিদ, ফতেহপুর দুর্গ, এবং তাহখানা কমপ্লেক্স, যা ইতিহাস-প্রেমীদের জন্য একটি সমৃদ্ধ ভ্রমণপথ তৈরি করে।


কিভাবে যাবেন সোনা মসজিদে?

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদর থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে শিবগঞ্জ উপজেলার এই মসজিদটি অবস্থিত। ঢাকা থেকে ট্রেন বা বাসে সরাসরি চাঁপাইনবাবগঞ্জ আসা যায়, সেখান থেকে অটো বা বাসে শিবগঞ্জ পৌঁছে খুব সহজেই মসজিদে যাওয়া যায়। গাড়ি ভাড়া করে


0 Comments

Post a Comment

Post a Comment (0)

Previous Post Next Post